গাজী হুমায়ুন কবির বুলু। বর্তমান ডুমুরিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান। ছিলেন উপজেলা যুবদল আহবায়ক। ডুমুরিয়ার নিয়ন্ত্রক কর্তা হতে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে তুষ্ট করে ভাগিয়ে নেন নৌকা। ভোট কেটে এবং কেন্দ্র দখল করে ২০১৬ সালে হয়ে যান সদরের চেয়ারম্যান। সেখান থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আওয়ামী লীগ ও মন্ত্রীর প্রভাব ব্যবহার করে নিজেকে একনায়ক তন্ত্রের মহানায়ক বানিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদকে নিজের সম্পত্তি বানিয়েছেন। কোনো ইউপি সদস্যর মতামত ছাড়াই নেন প্রকল্প। ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ড বিতরণ করেন নিজস্ব বাহিনী দিয়ে। ট্রেড লাইসেন্স, চৌকিদারী ট্যাক্স ও অন্যান্য প্রত্যায়ণ এখনও দেন এনালকে। নেই তার কোনো সঠিক লেজার বা হিসেব। সরকারি টাকায় পরিষদের মধ্যে নির্মাণ করেছেন একাধিক দোকান। মোটা অংকের টাকা অগ্রিম নিয়ে ভাড়া তোলেন নিজেই। নেই তার হিসেব। গরীবের গেল ছয় মাসের চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন।
এসব অনিয়মের কারণে সম্প্রতি এলাকাবাসী ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে করেন লিখিত নালিশ। এছাড়া জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে নয় ইউপি সদস্য এসব অনিয়মের বিচার চেয়ে আবেদন করেছেন। এসকল অভিযোগ ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে ভাড়াটিয়া রবিউল ইসলাম বাবুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ১৪ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে পরিষদের দোকান ভাড়া নিয়েছি। মাসে ভাড়া দেওয় হয় ৩১’শ টাকা। ফটিক সাহার কাছ থেকে অগ্রিম দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে যুবদল নেতা পারভেজ বলেন, বুলু চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের আমলে তার নামে কমপক্ষে ১২ টি মামলা দিয়েছে। যুবদল নেতা সুমনকে প্রকাশ্যে তার নেতৃত্বে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে হয়রানিমূলক মামলার নায়ক বুলু বলে তিনি জানান।
ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান খান বলেন, সম্প্রতি আরাজি ডুমুরিয়ায় এক রাস্তায় অনিয়ম করায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মধ্যমে আবারও টাকা দিয়ে ১৪০ ফুট রাস্তার কাজ করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য গফফার গাজী ও নাজমুল হোসেন বকুল বলেন, চেয়ারম্যান সবকিছু একাই করেন। কারো মতামত নেন না। যে কারণে তার অপসারণ চেয়ে আবেদন করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, এলাকাবাসী তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছিল। আমি তাদেরকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিতে বলেছি। এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্যরা একাধিক লিখিত অভিযোগ করেছেন। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে সকল অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবির বুলু বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম